রমজান মাসে কোন দোয়া বেশি বেশি পড়তে হয়
রমজান মাসে কোন দোয়া বেশি বেশি পড়তে হয়, রমজান মাসের বেশি দোয়া ও আমল করার
ফজিলত অন্য সময় থেকে অনেক বেশি কার্যকারী কারণ রমজান মাসে দোয়া করলে সেই
দোয়া তো খুব তাড়াতাড়ি আসে যেমন আল্লাহর কাছে যদি কোন কিছু চাওয়া হয় সেটা খুব
তাড়াতাড়ি মহান আল্লাহতালা আমাদের দিয়ে দেয়।
অনেকেই জানতে চাই রমজান মাসে বেশি বেশি দোয়া পড়লে কি ফজিলত পাওয়া যায় যারা এ
বিষয়ে জানতে চান তাহলে ঠিক জায়গায় এসেছে আজ আমি আমার এই আর্টিকেলটির
মাধ্যমে রমজান মাসে বেশি দোয়া পড়তে হয় কেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
করব আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমারে পোস্টে মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ রমজান মাসে কোন দোয়া বেশি বেশি পড়তে হয়
রমজান মাসে কোন দোয়া বেশি বেশি পড়তে হয়
রমজান মাসে কোন দোয়া বেশি বেশি পড়তে হয়, রমজান মাসে বেশি বেশি দোয়া করলে
আমাদের অনেক বেশি ফজিলত লাভ করতে পারি সেক্ষেত্রে রমজান মাসে বেশি করে দোয়া করতে
হয় অন্য মাসের থেকে রমজান মাস মুসলমানদের জন্য খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস এ
মাসে মহান আল্লাহতালা কোরআন নাযিল করেছিলেন।
তাই অন্য মাসের থেকে রমজান মাসে দোয়া বেশি বেশি পড়তে হয় রমজান মাসে দোয়া যত
বেশি পড়বো তত বেশি আমাদের লাভ হবে মহান আল্লাহতালা আমাদেরকে রমজান মাসে বেশি
বেশি দোয়া পড়তে বলেছেন এবং গরিবদের মাঝে বেশি বেশি দান করতে বলেছেন আরো রমজানের
৩০ টি রোজা পালন করার কথা বলেছেন।
আরো পরুনঃ রোজার মাসে দান করার ফজিলত
রমজানে যদি আমরা বেশি বেশি দোয়া করি তাহলে আমাদের আমলে অনেক সওয়াব যোগ হবে
এবং এই সওয়াব আমাদেরকে পরকালে জন্য সঞ্চয় করতে হবে তাই আমরা সব সময়
চিন্তা করব এবং চেষ্টা করব অন্য মাসের থেকে রমজান মাসে সব থেকে বেশি দোয়া করব
এবং এবাদত করব জিকির করব এতে আমাদের অনেক লাভ হবে।
সেহরির দোয়া
দোয়াঃ- আল্লাহর নামে শুরু করছি এবং আল্লাহর বরকতের সাথে।
বাংলা উচ্চারণঃ- বিসমিল্লাহি ওয়া আলা বারাকাতিল্লাহি
বাংলা অর্থঃ- আমি আল্লাহর নামে সেহরি খাচ্ছি এবং তাঁর বরকতের উপর ভরসা করছি।
সেহরি শুধু শারীরিক প্রস্তুতি নয়, এটি বরকতের একটি অংশ। তাই সেহরির সময় আল্লাহর
কাছে বরকত, ক্ষমা ও রহমত প্রার্থনা করা উচিত। আল্লাহ আমাদের রোজাকে কবুল করুন ও
আমাদের ওপর দয়া করুন।
ইফতারের দোয়া
দোয়াঃ- আল্লাহুম্মা ইন্নি লাকা সাওমতু, ওয়ালা রিজকিকা আফতারতু
বাংলা উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা ইন্নি লাকা সাওমতু, ওয়ালা রিজকিকা আফতারতু
বাংলা অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমি তোমারই জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমার দেয়া রিজিক
দ্বারা ইফতার করছি।
রমজান মাসে আমাদের ইফতার পর সেহরির সময় বেশি বেশি দোয়া পড়া খুবই
গুরুত্বপূর্ণ কারণ অন্য সমাজ থেকে রমজান মাসে বেশি বেশি দোয়া পড়লে অনেক
বেশি ফজিলত পাওয়া যাবে সে ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই রমজান মাসে মহান আল্লাহ
তাআলার নিকট বেশি বেশি দোয়া পড়তে হবে ও বেশি বেশি আমার উপর উঠতে হবে।
রমজানের বিশেষ দোয়া
দোয়াঃ- আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রামাদানা ওয়া তাকাব্বাল মিনা সিয়ামানা
ওয়া কিয়ামানা, ওয়া গাফির লানা মা কদামনা ওয়া মা আখরনা।
বাংলা অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমাদের জন্য রমজান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের
রোজা ও নামাজ কবুল করুন, আমাদের আগের ও পরের পাপ মাফ করুন।
রাতের তাহাজ্জুদ ও কিয়ামুল লাইলের দোয়া
বাংলা উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআহমাতিকা আল্লাতী ওয়াসিআত কুল্লা
শয়ইয়িন আন্না তাঘফির লী
বাংলা অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমি তোমার রহমত চাই যা সমস্ত কিছুতে বিস্তৃত, আমার
জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
রমজান মাসে কোন দোয়া বেশি বেশি পড়তে হয়, রাসুল সাঃ বলেছেন তোমরা রাতে তাহাজ্জুদ
নামাজ পড়ো যত বেশি তাহাজ্জুদ নামাজ পড়বে তত বেশি আল্লাহর কাছে তুমি তার খাস
বান্দা হয়ে উঠতে পারবে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার ফলে মহান আল্লাহতালা
আমাদের সকল দুঃখ কষ্ট থেকে বিরত রাখে এবং মহান আল্লাহতালা আমাদের
উপরে শান্তি নাযিল করে তাহাজ্জুদ নামাজ এমন একটি নামাজ যে নামাজ গভীর রাতে
পড়তে হয়।
আরো পরুনঃ রমজান মাসে মসজিদে দান করার ফজিলত
নামাজ পড়ে তাদের দরবারে দুই হাত তোলেন আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে চাইলে মহান
আল্লাহতালা আমাদের সকল চাওয়া পাওয়া পূর্ণ করে দেয় বিশেষ করে অন্য মাসের থেকে
রমজান মাসে তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত অনেক বেশি তাই রমজান মাসে তাহাজ্জুদ নামাজ
পড়ে তাহাজ্জুদের দোয়া পড়তে হবে এতে আমাদের মহান আল্লাহতালা সকল দুঃখ কষ্ট
থেকে মুক্তি দিবেন।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ো, কারণ
তা তোমাদের জন্য অতিরিক্ত পুরস্কার লাভের উপায় এবং আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি
প্রিয়।" (মুসলিম) এই হাদিসটি আমাদের জানায় যে, রাতের তাহাজ্জুদ নামাজ আল্লাহর
কাছে সবচেয়ে প্রিয় ইবাদত। তাহাজ্জুদ আমাদের মধ্যে আত্মবিশ্লেষণ এবং আত্মশুদ্ধির
পথ খুলে দেয়।
রাতে যখন আমরা ঘুম থেকে উঠে আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে দোয়া করি, তখন আল্লাহ আমাদের
সব দোয়া কবুল করেন এবং আমাদের অজানা পাপগুলো মাফ করে দেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
আরো বলেছেন, "রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ স্বীয় রহমত নিয়ে পৃথিবী আসমানে
অবতীর্ণ হন এবং বলেন, 'কেউ কি আছে যে আমার কাছে প্রার্থনা করবে,
আমি তার প্রার্থনা গ্রহণ করব?'" (বুখারি ও মুসলিম) এই হাদিসটি আমাদের মনে করিয়ে
দেয়, রাতের বিশেষ সময় আল্লাহ আমাদের কাছে অত্যন্ত নিকটে থাকেন এবং আমাদের সকল
দোয়া কবুল করেন। কিয়ামুল লাইলের সময়ে আমাদের অন্তর একেবারে আল্লাহর দিকে
মনোযোগী হয়ে থাকে, আমাদের দোয়া এবং ইবাদত আল্লাহর কাছে অনেক বেশি প্রিয়।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) একবার বলেছেন, "রাতের শেষ তৃতীয়াংশে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে,
তার সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে, যদিও তা সমুদ্রের ঢেউয়ের মতোই অগণিত, কারণ সে
আল্লাহর সামনে আত্মসমর্পণ করেছে এবং তার হৃদয় আল্লাহর দিকে নিবদ্ধ রয়েছে।"
(তিরমিজি) এটি আমাদের শেখায় যে, রাতের নামাজে আল্লাহর নিকট পৌঁছানোর এক বিশেষ
পথ রয়েছে, এবং এ সময়ে যে দোয়া করা হয়,
তা আল্লাহ তার বিশেষ রহমত ও দয়া দ্বারা কবুল করেন। আবার, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
তাহাজ্জুদ নামাজে একটি বিশেষ দোয়া পড়তেন, যা ছিল, "হে আল্লাহ, আমি তোমার রহমত
চাই যা সমস্ত কিছুতে বিস্তৃত, আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।" এই দোয়া
আল্লাহর রহমত ও ক্ষমার আহ্বান জানায় এবং আল্লাহর কাছ থেকে মাফ ও বরকত লাভের পথ
খুলে দেয়।
এভাবে, রাতের তাহাজ্জুদ ও কিয়ামুল লাইলের সময় আমরা আমাদের প্রার্থনাগুলো
আল্লাহর কাছে পৌঁছাতে পারি এবং তিনি আমাদের আত্মার শুদ্ধি, পাপমুক্তি এবং
সুস্থতা প্রদান করেন।
লাইলাতুল কদরের দোয়া
- দোয়াঃ- হে আল্লাহ, তুমি ক্ষমাশীল, তোমার কাছে ক্ষমা চাওয়া সবচেয়ে প্রিয়, তাই তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।
- হাদিসঃ- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর রাতে আল্লাহর কাছে দোয়া করবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন। (তিরমিজি)
- অর্থঃ-এই দোয়াটি আল্লাহর বিশেষ ক্ষমা ও রহমত লাভের জন্য। এটি লাইলাতুল কদর রাতে পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- বর্ণনাঃ- লাইলাতুল কদর হল এমন একটি রাত, যখন আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত সর্বাধিক হয়। এই রাতে দোয়া করলে আল্লাহ আমাদের পাপ মাফ করে দেন এবং আমরা তাঁর কাছ থেকে অসীম বরকত লাভ করতে পারি।
দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণের দোয়া
- বাংলা উচ্চারণঃ- রাব্বানা আতিনা ফি দুনইয়া হাসানতান ওয়া ফি আখিরাতি হাসানতান ওয়াকিনা আযাবান নারি।
- বাংলা অর্থঃ- হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়াতে ভালো দাও, আখিরাতেও ভালো দাও এবং আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।
- হাদিসঃ- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই দোয়া নিয়মিত পড়তে বলেছেন, কারণ এতে দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা ও কল্যাণের জন্য আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা হয়।
জান্নাত প্রার্থনার দোয়া
- বাংলা উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ফিরদাউসাল আ'লা মিনাল জান্না
- বাংলা অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান, ফিরদৌস প্রার্থনা করি।
- হাদিসঃ- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান ফিরদৌসের জন্য দোয়া করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের সবচেয়ে উচ্চ স্থান দান করবেন। (বুখারি)
দোয়া কবুলের জন্য বিশেষ দোয়া
- বাংলা উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিসমিকা আল আ'যমাল্লাদী ইদা সাআলতা বিহি আতা'ইতা, ওয়া ইদা দুআইতা বিহি আযবতা
- বাংলা অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমি তোমার সেই মহান নামের মাধ্যমে তোমার কাছে প্রার্থনা করি, যেটি তুমি ছাড়া অন্য কেউ জানে না। যখন এই নামের মাধ্যমে তোমার কাছে কিছু চাওয়া হয়, তখন তুমি তা দান করো, এবং যখন এর মাধ্যমে ডাকা হয়, তখন তুমি উত্তর দাও।
- বর্ণনাঃ- এই দোয়া বিশেষভাবে আল্লাহর মহান নামের দ্বারা প্রার্থনা করার একটি উপায়, যা দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনাকে বৃদ্ধি করে। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই দোয়াটি বিশেষভাবে নামাজের পর, মুনাজাতে এবং বিভিন্ন দোয়া ও প্রার্থনায় ব্যবহার করতেন।
শেষ কথাঃ রমজান মাসে কোন দোয়া বেশি বেশি পড়তে হয়
রমজান মাসে কোন দোয়া বেশি বেশি পড়তে হয়, রমজান মাসে কোন দোয়া পড়তে
হয় বেশি সেই সম্পর্কে আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে অনেক
কিছু আলোচনা করলাম আসলে রমজান মাস এমন একটি মাস এই মাসে মুসলমানদের জন্য খুবই
গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস আসলে মুসলমানরা এই মাসের আশায় দীর্ঘ এক বছর সাধনা নিয়ে
বসে থাকে।
আরো পরুনঃ লাইলাতুল কদর কত তারিখে হবে ২০২৫
কারণ এই মাসে মহান আল্লাহতালা মুসলমানদের জন্য বিশেষ ফজিলতের ব্যবস্থা করে
রেখেছে এই মাসে যে কোন দান সদকা করলেন মহান আল্লাহ তায়ালা
এটাকে অনেক বেশি পরিমাণ বৃদ্ধি করে দেয় তাহলে মুসলমানদের জন্য রোজার এই
মাসটি হলো বড় আমলের মাস এই মাছটি হল একটি ফ্রি লটারির মতন যে
যত বেশি আমল করবে দোয়া করবে জিকির করবে নামাজ পড়বে।
ইবাদত করবে তার তত বেশি সওয়াব হবে তাই এই মাসে মুসলমানদের জন্য খুবই পূর্ণতার
একটি মাস আমাদের এই মাসে মহান আল্লাহ তায়ালার কথা অনুযায়ী বেশি বেশি সবকিছু
আমল করতে হবে সব থেকে বিশেষ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই মাসে আমাদের কোরআন
নাযিল হয়েছিল তাই এই মাসের আমরা রোজা করে বেশি বেশি কোরআন পড়বো এবং নামাজ
পড়বো।
আমার এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের মাঝে অনেক কথা বললাম রমজান মাসে কেন দোয়া
বেশি পড়তে হয় সেই সম্পর্কে আশা করি আপনারা আমার এই আর্টিকেলটি করে উপকৃত হবেন
আর যদি কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন আমি আপনার
সমস্যাটা সমাধান করার জন্য চেষ্টা করব।
এ এস এম ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url