নিজেকে পরিবর্তন করার ৬ টি কার্যকারী উপায়

নিজেকে পরিবর্তন করার ৬ টি কার্যকারী উপায়, বর্ধমান সময়ে দেখা যায় অধিকাংশ মানুষ তাদের অবস্থান নিয়ে তারা অসন্তুষ্ট থাকে। কেউ শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে, কেউ আবার অর্ধেক অসুস্থতা নিয়ে, কেউ আবার অন্যান্য দিক দিয়ে হতাশা নিয়ে।
নিজেকে-পরিবর্তন-করার-৬-টি-কার্যকারী-উপায়
কিন্তু আপনি কি জানেন নিজেকে পরিবর্তন করে তোলা সম্ভব। প্রকৃতপক্ষে নিজেকে পরিবর্তন করা অস্বাভাবিক কোনো কিছুই নাই। আপনি নিজেই নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলতে পারবেন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ নিজেকে পরিবর্তন করার ৬ টি কার্যকারী উপায়

নিজেকে পরিবর্তন করার ৬ টি কার্যকারী উপায়

নিজেকে পরিবর্তন করার ৬ টি কার্যকারী উপায়, আমরা কিন্তু যে যেমনই থাকি না কেন আমরা কিন্তু নিজেকে পরিবর্তন করতে চাই। সেটা হোক মানসিক চাপ থেকে কিংবা অর্থ সম্পদ থেকে কিংবা খারাপ অভ্যাস থেকে আমরা নিজেকে পরিবর্তন করতে চাই সব সময়। কিন্তু মনে মনে প্রতিজ্ঞা করি নিজেকে পরিবর্তন করব।

ওইভাবে প্রতিজ্ঞা করে হওয়া ওঠেনা কারণ আমি যখন একটা বিষয় নিয়ে প্রতিজ্ঞা করে থাকি তখন মনের ভেতরে হয় যে আমি এটা বাদ দিয়ে থাকব। কিন্তু আমাদের আশেপাশে জীবনযাত্রা দেখে আমাদের প্রতিজ্ঞাটা ভঙ্গ হয়ে যায়। তাই আজ আমি আমার এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের সাথে বলার চেষ্টা করব আপনি কিভাবে নিজেকে পরিবর্তন করবেন।

আপনি যদি নিজেকে পরিবর্তন করতে চান তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন। নিজেকে পরিবর্তন করার সঠিক কার্যকারী ও গুরুত্বপূর্ণ উপায় আপনাদের সাথে তুলে ধরতে চলেছে। তাই আমার এই আর্টিকেলটি আপনি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং আপনার জীবনযাত্রাকে পরিবর্তন করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করুন।

আমরা কিন্তু প্রতিদিন পরিবর্তন এর মধ্য দিয়ে যায় মানুষের জীবনযাত্রা এবং, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিত্ব সবকিছু দিয়েই আমরা কিন্তু পরিবর্তন হতে পারি। এই বিষয়টা হয়তো অনেকেই জানে না আবার অনেকের কাছে জানা আছে তাই আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি নিজেকে পরিবর্তন করার উপায়গুলো তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

নিজেকে নিজে ফোকাস করুন

নিজেকে পরিবর্তন করার প্রথম ধাপ হল নিজের অবস্থা চিহ্নিত করা এবং নিজের অবস্থাকে পরিচালনা করা, আপনি যদি মনে করেন আপনিও অসুস্থতা কিংবা ব্যক্তিগত নিজেকে নিয়ে অসন্তুষ্ট। ইত্যাদি থেকে থাকে তাহলে আপনাকে কিন্তু প্রথমেই এসব সমস্যার মূল কারণ গুলো বের করতে হবে। এবং বের করে এর কারণগুলো থেকে নিজেকে আড়াল করার চিন্তা করতে হবে।

এখন অনেক সময় দেখা যায় আমার আগে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকলে। সেখান থেকে বের হওয়া আমাদের খুব কঠিন হয়ে যায়, যেমন ধরেন আপনার আর্থিক অবস্থার উন্নতি করা প্রয়োজন। এজন্য প্রথমে আপনাকে বুঝতে হবে কোথায় আপনার কম খরচ করতে হবে এবং কিভাবে আপনি আয়ের উৎস বাড়াতে পারবেন। 
ওয়াল্ড হেলথ এক গবেষণায় 2019 সালে দেখা গেছে যে, যারা নিজের সমস্যার সমাধানের নিজে কাজ করে তারা ৬০% ক্ষেত্রে সফল হয়। এই গবেষণায় দেখা গেছে যে নিজের জীবনের সমস্যাগুলো নিজের চিহ্নিত করে, নিজের জীবন পরিবর্তন করা এবং নিজেই নিজের জীবন পরিবর্তন করে নিজে প্রস্তুত হতে পারে এজন্যই অবশ্যই আপনাকে নিজের দিকে ফোকাস দিতে হবে।

নিজেকে পরিবর্তন করার প্রথম ধাপ হলো এটা। আপনি যদি নিজের সম্পর্কে আপনি নিজেই না ভালোভাবে বুঝতে পারেন তাহলে আপনি নিজেকে পরিবর্তন করতে পারবেন না সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে নিজের উপরে রাখতে হবে এবং নিজের ব্যাড হ্যাবিট গুলা বাদ দিয়ে যেগুলো ভালো হ্যাবিট সেগুলো নিয়ে আপনাকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

নিজের মানসিকতা পরিবর্তন করুন

বড় বড় বিশেষজ্ঞরা বা কবিরা তারা লিখে গেছেন যে নিজের মানসিকতা দুই ধরনের হয়ে থাকে। ফিক্সড মাইন্ডেসেট এবং গ্রোথ মাইন্ডেসেট, যারা ফিক্সড মাইন্ডেসেট থাকেন তারা বিশ্বাস করেন তাদের বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব, আর তারা মনে করেন যে তাদের যেটা দেয়া হয়েছে তাদের যোগ্যতা হিসাব করে দেওয়া হয়েছে। এজন্যই তাদের মন মানসিকতা ফিক্সড মাইন্ডেসেট থাকে।
নিজের-মানসিকতা-পরিবর্তন-করুন
আবার অন্যদিকে দেখা যায় যে যারা গ্রোথ মাইন্ডেসেট থাকেন তারা বিশ্বাস করে যে তাদেরকে দিয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন এবং উন্নতি করা সম্ভব। এ মনোভাব হলেও পরিবর্তনের মূল চাবিকাঠি।আমাদের উন্নতির জন্য যখন মানসিক পরিবর্তন করি। যখন আমরা নিজেকে পরিবর্তন করার জন্য।বিশেষজ্ঞরা বলে গিয়েছেন যে,

যারা মানসিক চাপ পরিবর্তন করার জন্য চেষ্টা করেন তারা নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন এবং সেটাকে অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যান এজন্য নিজের মানসিক চাপ পরিবর্তন করতে হলে আপনার নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে এবং সেই চ্যালেঞ্জ কে সম্মুখীন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

আপনার শক্তি এবং সম্পদ গুলোর উপরে প্রকাশ করুন

অনেক সময় আমরা অন্যের জীবনের দিকে তাকিয়ে নিজের দুর্বলতা নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ি। অন্যের সবকিছুই ভালো মনে হয়। কিন্তু আপনি ভেবে দেখেন আপনি যদি আপনার কার্যক্রম যথার্থ ভাবে নিজের কাজকে নিজে মূল্যায়ন না করলে। তাহলে কিন্তু আপনার জীবনে উন্নতি করা খুবই কঠিন হয়ে যাবে তাই নিজের দিকে ফোকাস দিন।
বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে অন্যের জীবনকে দেখে নিজের জীবনের কম মূল্যায়ন করা খুবই সহজ। কিন্তু আমাদের উচিত নিজের শক্তির উপরে মনোনিবেশন করা, আপনি দেখুন আপনার কাছে কি আছে এবং সেই সম্পদ গুলো দিয়ে কিভাবে নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারবেন। যারা নিজের শক্তি এবং দক্ষতার দিকে মনোযোগ দেয়।

তারা সাফল্যের পথ আরো দৃষ্টি ভাবে এগিয়ে যেতে পারে, তাই অন্যদিকে না তাকিয়ে নিজের শক্তির দিকে মনোযোগ দিন এবং নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করুন। অন্যদিকে তাকালে আপনি নিজের উপরে দুর্বল হয়ে পড়বেন সেক্ষেত্রে অন্যদিকে তাকানো কোন দরকার নেই। যারা অনেক বড় বড় জায়গায় গিয়েছে তাদের জীবন কাহিনী গুলো পড়ুন।

দেখুন তারা আপনার থেকেও হয়তো খারাপ অবস্থায় ছিল এখন তারা কোন অবস্থায় আছে এটাকে পড়ে আপনার ভিতরে মনবল বের করুন এবং। সব সময় চেষ্টা করবেন অন্য দিকে না তাকিয়ে নিজের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে। যে সম্পদ আছে সেই সম্পদ গুলো আরো বড় করার চেষ্টা করুন।

পরিবর্তনের জন্য নেতিবাচক অভ্যাস ত্যাগ করুন

নিজেকে পরিবর্তন করতে হলে প্রথমে আপনাকে নেতিবাচক অভ্যাস গুলো চিহ্নিত করতে হবে। আপনার ভিতরে কোনগুলো নেতিবাচক অভ্যাস আছে। আমাদের প্রতিদিন অনেক রকমের অভ্যাস আছে যা আমাদের উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করে। যেমন, অতিরিক্ত রাগ, ধূমপান, মদ্যপান, খারাপ সঙ্গে মেশা, ইত্যাদি। এই অভ্যাসগুলো আগে ত্যাগ করতে হবে।
 
আপনি যখন এই অভ্যাসগুলো ভাগ করে ফেলবেন দেখবেন আপনার জীবনে অন্যান্য অভ্যাসগুলোর উন্নতি হচ্ছে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে নেতিবাচক অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে হবে। নেতিবাচক অভ্যাস ত্যাগ না করলে আপনি কখনো সামনের দিকে এগোতে পারবেন না এবং নিজেকে পরিবর্তনও করতে পারবেন না ধীরে ধীরে আরো খারাপের দিকে চলে যাবেন।

একটি গবেষণায় দেখা গেছেন যে যারা যাদের নেতিবাচক অভ্যাস ত্যাগ করেন তাদের ভিতরে ব্যক্তিগত উন্নতির হার ৮৫% বেড়ে গিয়েছে।

পরিবর্তনের জন্য ধীরে ধীরে ইতিবাচক অভ্যাস করুন

নিজেকে পরিবর্তন করার ৬ টি কার্যকারী উপায়, নিজেকে পরিবর্তন করতে হলে ইতিবাচক অভ্যাস অবশ্যই আপনাকে তৈরি করতে হবে। ধীরে ধীরে মানুষের সঙ্গ দিন এবং মানুষের উপকার করুন।ইতিবাচক অভ্যাস এমন একটি অভ্যাস না করলে তুমি সব সময় তোমার নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে এবং ভালো মানুষের সঙ্গ পাবা।
পরিবর্তনের-জন্য-ধীরে-ধীরে-ইতিবাচক-অভ্যাস-করুন
তুমি যখন ইতিবাচক অভ্যাস তৈরি করে ফেলবা তখন দেখবা তুমি যা কিছু করো না কেন সেটাই তুমি সাকসেস হতে হয়ে যাচ্ছ সে ক্ষেত্রে তোমার অবশ্যই ইতিবাচক অভ্যাস তৈরি করতে হবে। তুমি কেমন ইতিবাচক অভ্যাস তৈরি করবা তা নিচে কিছু উল্লেখ করে দেওয়া হলো।
  • গরিব অসহায় দান করা।
  • প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট বই পড়া।
  • খারাপ বন্ধু দেড় থেকে দূরে থাকা।
  • বাবা-মায়ের সঙ্গ দেওয়া।
  • প্রতিদিন নতুন নতুন কিছু শেখা।
  • প্রতিদিন ব্যায়াম করা।
  • নিয়মিত খাবার দাবার খাওয়া।
  • সবার সাথে ভালো ব্যবহার করা এবং সবাইকে উপকার করা।
  • নিজের উপরে নিজেকে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা।
  • তুমি যেটা বুঝতে পারো না সেটা অন্যের থেকে বুঝে নেওয়া।
ধীরে ধীরে এই অভ্যাসগুলো আপনার জীবনকে আরও উন্নতি করবে। ইতিবাচক অভ্যাস তৈরি করার জন্য আপনার হয়তোবা অনেক সময় লাগবে কিন্তু একবার যদি আপনার জীবনের অংশ হয়ে যায়। তাহলে আপনি সহজেই আরো বড় পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন। সে জন্য অবশ্যই আপনাকে ধীরে ধীরে এই অভ্যাসগুলো করতে হবে।

নিজেকে প্রতিশ্রুতিবন্ধ করুন এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

আপনি যদি নিজেকে উন্নতি করতে যান তাহলে আপনাকে নিজের উপরে প্রতিশ্রুতি করতে হবে। আপনি যদি প্রতিদিন নিজের পরিবর্তনের জন্য কাজ না করেন তাহলে কোন পরিবর্তনই আপনার স্থায়ী হবে না। আর এই জন্য আপনাকে নিজের একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে লক্ষ্য নির্ধারণ না করলে আপনি আপনার পরিবর্তন করতে পারবেন না পরিবর্তন করার জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতেই হ।
কোন এক গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা তাদের জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে তারা ৮০% ক্ষেত্রে সেই লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়। তাই নিজেকে প্রতিশ্রুতি করুন এবং আপনার জীবনের লক্ষ্য গুলোর লিখে ফেলুন। নিজেকে পরিবর্তন করা একদিনে সম্ভব নয়, তবে এটি ধাপে ধাপে সম্ভব। প্রথমে আপনার নিজের সমস্যা চিহ্নিত করুন।

তারপরে মানুষের কথা পরিবর্তন করুন ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলুন নেতিবাচক অভ্যাস ত্যাগ করুন। এবং নিজের শক্তি এবং সম্পদের উপরে ফোকাস দিন। এবং সর্বশেষ নিজের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে নিজের লক্ষ নির্ধারণ করুন জীবনের প্রতি মুহূর্তে নিজেকে পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত রাখুন। দেখবেন এক সময় আপনার জীবন আরো সুন্দর হয়ে।

শেষ কথাঃ নিজেকে পরিবর্তন করার ৬ টি কার্যকারী উপায়

নিজেকে পরিবর্তন করার ৬ টি কার্যকারী উপায়, বর্তমান সময়ে আমরা অনেকেই চাই নিজেকে পরিবর্তন করতে সেটা হোক ছেলে বা মেয়ে পরিবর্তন সবাই চায় নিজের। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি আমি আপনাদের জন্য লিখেছি নিজেকে পরিবর্তন করার সঠিক গাইডলাইন হিসাবে। আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যেই।

জেনে গিয়েছেন যে আপনি নিজেকে পরিবর্তন করার সঠিক কার্যকারী ও উপায় আসলে নিজেকে পরিবর্তনকে করতেই না চাই তাই নিজেকে পরিবর্তন করে তুলুন এবং নিজের জীবনকে সামনের দিকেএগিয়ে নিয়ে যান। যাই হোক আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন কমেন্ট করে।

আর যদি কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে আমাকে অবশ্যই কমেন্টস করবেন না হলে আমার কন্টাক্ট কাজ পেজে গিয়ে আমাকে পার্সোনালি মেসেজ করবেন আমি আপনাকে। সমস্যাটাকে সমাধান করার জন্য চেষ্টা করব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এ এস এম ব্লগারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url